৪০ বছয় বয়সের উর্ধ্বে যারা বা যাদের ডায়াবেটিস বা অন্যান্য রোগ রয়েছে তাদের মধ্যে একধরনের রোগলক্ষণ দেখা দেয় তাহলো কাধের যে জয়েন্ট সেটি আকড়ে যায়, শক্ত হয়ে যায়। তারা নড়াচড়া করতে পারে না। কাধ নাড়াচাড়া করলে ব্যথা হয়। রোগী খুব কষ্ট পায়। রোগটি ফ্রোজেন শোল্ডার নামে পরিচিতি। 

ফ্রোজেন শোল্ডারের  হোমিওপ্যাথি ওষুধ
ফ্রোজেন শোল্ডারের  হোমিওপ্যাথি ওষুধ


আজকে ফ্রোজেন শোল্ডার নিয়ে আলোচনা করব। রোগটির কারণ, লক্ষণ এবং এর কার্যকর হো্মিোপ্যাথি ও বায়োকেমিক ওষুধ সম্পর্কে আলোচনা করব। 


কারণসমূহ


>বয়সের কারণে হয়ে থাকে। এটি ৪০ বছরের উর্ধ্বে মহিলাদের বেশি হয়ে থাকে। তবে পুরুষদেরও এই রোগ  হয়। 


>ডায়াবেটিস থাকলে, থাইরয়েড কম থাকলে বা অনেক থাকলে এটি হয়ে থাকে। 


>যাদের নার্ভ ও হার্টের সমস্যা রয়েছে তাদেরও এই রোগ হয়। 


লক্ষণসমূহ


>রোগটিকে তিনটি স্তরে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম স্টেজকে বলা হয় ফ্রিজ স্টেজ। এই স্টেজের লক্ষণ হলো রোগীর কাধ একদম জমে যায়। একদম নড়াচড়া করতে পারে না। নড়চড়া করতে গেলেই খুব যন্ত্রণা করে। এই ফ্রিজ স্টেজ দুই থেকে নয়মাস পর্যন্ত থাকে। 


>দ্বিতীয় স্টেজকে বলা হয় ফ্রোজেন স্টেজ। এই স্টেজে ব্যথা আস্তে আস্তে কমতে থাকে। কিন্তু কাধের জয়েন্টের যে আড়স্টতা, যে শক্তভাব তা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই স্টেজ চার থেকে ১২ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে। 


>তৃতীয় স্টেজটির নাম থ্রোয়িং স্টেজ বা গলানো স্টেজ। এই স্টেজে রোগী হাত পা নড়াচাড়া করতে পারে। ব্যথাও কমে যায়। এটি ৫ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে হয়ে থাকে। 


কার্যকর ওষুধ


তিনটি হোমিওপ্যাথি ওষুধ দরকার ওষুধটি তৈরি করতে-


১. Rhus tox 3x: পেইন কিলার হিসেবে কাজ করে। ফ্রোজেন শোল্ডারের জন্য কার্যকর। 

ফ্রোজেন শোল্ডারের  হোমিওপ্যাথি ওষুধ
Rhus tox 3x

২.Colocynthis 3x: যদি চাপ দিলে আরাম হয়, নার্ভে যদি যন্ত্রণা থাকে সেক্ষেত্রে খুবই উপকারী। এটি ফ্রোজেন শোল্ডারের জন্যও খুব উপকারী। 

ফ্রোজেন শোল্ডারের  হোমিওপ্যাথি ওষুধ
Colocynthis 3x


৩. Arnica Mont 3x: এটি সমস্ত রকম ব্যথা ও ফ্রোজেন শোল্ডারের ক্ষেত্রে উপকারী। 

ফ্রোজেন শোল্ডারের  হোমিওপ্যাথি ওষুধ
Arnica Mont 3x


এই তিনটি হোমিওপ্যাথি ওষুধ ২০ এমএল করে কিনে ১০০ এমএলের একটি কাচের শিশিতে মিশিয়ে ভাল করে ঝাকিয়ে নিবেন। তৈরি হয়ে গেল ফ্রোজেন শোল্ডারের একটি কম্বিনেশন হোমিওপ্যাথি ওষুধ। 


সেবনবিধি: ১৫ ফোটা করে কাপের চার ভাগের এক ভাগ পানিতে দিয়ে সকাল, দুপুর ও রাতে খাবেন। খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে বা পরে খাবেন। 


এটি খেলে সমস্ত স্টেজে ব্যথা কমে যাবে। আড়ষ্টতা আস্তে আস্তে কমতে থাকবে। 


বায়েকেমিক ওষুধ BC 19: চারটি করে ট্যাবলেট সকাল, দুপুর ও রাতে খাবেন। চুষে খাবেন। গরম পানিসহ খাবেন। খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে বা পরে খাবেন। 

ফ্রোজেন শোল্ডারের  হোমিওপ্যাথি ওষুধ
BC 19


অন্য কোনো ওষুধ খেলে ১০ মিনিট গ্যাপ দিয়ে খাবেন। 


ওষুধগুলো যদি আপনারা খান তাহলে ফ্রোজেন শোল্ডারের ব্যথা থেকে আরাম পেয়ে যাবেন। আড়ষ্টতা আস্তে আস্তে কমতে থাকবে। আপনাদের ফ্রোজেন শোল্ডার তাড়াতাড়ি ভাল হয়ে যাবে।